যারা কবরের আজাব থেকে নিরপদে থাকবেন - Largest Sahih Bangla Quran and Hadith Collection Site

আসুন সবাই মিলে সহীহ বাংলা কুর'আন এবং হাদিস শিক্ষা করি ইসলামিক আলোকে জিবন গড়ি এবং অন্যকে ইসলামের প্রতি আহ্বান করি।

Monday, May 25, 2015

যারা কবরের আজাব থেকে নিরপদে থাকবেন

যারা কবর আজাব থেকে নিরাপদে থাকবেন মহানবী (স) বলেছেন- মৃত ব্যাক্তিকে দাফন করার পর লোকেরা যখন কবরস্থান থেকে চলে আসে , তখন সে তাঁদের পথ চলার জুতার শব্দ শুনতে পায় । সে মুমিন হলে তাঁর নামাজ এসে তখন শিওরে দাড়ায় । তাঁর রোজা এসে তাঁর ডান দিকে দাঁড়ায় এবং যাকাত এসে দাঁড়ায় বাম দিকে । আর সে যত নফল কাজ করেছে , যেমন নফল নামাজ , দান সদকা ও সৌজন্যমুলক আচরন ইত্তাদি কাজ গুলো তাঁর পদ যুগলের কাছে এসে দাঁড়ায় । তাঁর শিওরের দিক দিয়ে আজাবের আগমন ঘটলে , তাঁর নামাজ বলে ওঠে আমার দিক দিয়ে তোমার যাবার কোন পথ নেই । অতঃপর আজাব মৃত ব্যাক্তির ডান দিক থেকে আসার চেষ্টা করলে তাঁর রোজা বলে ওঠে, আমার দিক দিয়ে তোমার কোন পথ নেই । অতঃপর বাম দিক দিয়ে আসার চেষ্টা করলে , তাঁর দেয়া যাকাত দণ্ডায়মান হয়ে বলে আমার দিক দিয়ে তোমার যাবার কোন পথ নেই । অবশেষে পদযুগলের দিক দিয়ে আজাব আসতে শুরু করলে তাঁর নফল এবাদত সমুহ বলে আমাদের দিক দিয়ে তোমার কোন পথ নেই । — - তারগিব , তারহিব , তাবারানি , ইবনে হেব্বান হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর জনৈক সাহাবী কোন এক কবরের ওপর তাবু স্থাপন করলেন । তাঁর জানা ছিল না যে সেখানে কবর রয়েছে । তিনি তাবুর অভ্যন্তরে বসা ছিলেন । এমনি সময় হঠাৎ তিনি ভুতলে জনৈক ব্যক্তির কোরআন মজিদের সুরা মূলক পাঠের কণ্ঠ শুনলেন । সে সমস্ত সূরাটি পাঠ করলেন । এই ঘটনা নবী করীম (সঃ) কে অবগত করা হলে তিনি বললেন , “এই সুরা কবরের আজাবকে বাধা দান করে , আর ওই লোককে আল্লাহ্‌র শাস্তি হতে নিরাপদ রাখছে । — - তিরমিজি শরীফ হযরত আবু হোরায়রা (রা) বর্ণনা করেন , রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন , “কোরআন মজিদে এমন একটি সুরা রয়েছে , যার আয়াত সংখ্যা হচ্ছে তিরিশ । সে সুরাটি কারো জন্য আল্লাহ্‌র কাছে সুপারিশ করলে আল্লাহ্‌ তায়ালা তাঁকে ক্ষমা করে দেন । সে সূরাটি হচ্ছে সুরা মূলক । ( অর্থাৎ তাবা-রাকাল্লাজি বি ইয়া দী হিল মূলক — – তিরমিজি,আবু দাউদ হযরত খালেক ইবনে মাদান (র) সুরা মূলক ও সুরা আলিফ লাম মিম সেজদা প্রসঙ্গে বলতেন, এই সুরা দুটি কবরে তাঁর পাঠক দের পক্ষ নিয়ে আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয় । তাঁরা প্রত্যেকেই আল্লাহ্‌ তা'আলার কাছে বলে , “হে আল্লাহ্‌ ! আমি যদি তোমার কিতাবের কালাম না হয়ে থাকি তাহলে আমাকে তোমার কিতাব হতে বিলিন করে দাও । “খালেদ ইবনে মাদান (র) আরও বলতেন , এই সুরা দ্বয় পাখির ন্যায় ডানা মেলে তাঁর পাঠককে ধাকে রাখে , কবর আজাব থেকে রক্ষা করে । — - দারেমি , মেশকাত পেটের অসুস্থতায় মৃত্যু হলে হযরত সোলায়মান ইবনে মুরাদ (রা) বলেন , রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন , পেটের অসুস্থতায় যার মৃত্যু হয় কবরে তাঁকে শাস্তি দেয়া হবে না । - - তিরমিজি শরীফ , আহমদ পেটের অসুস্থতা নানা ধরনের হতে পারে , তার কোন একটিতে মৃত্যু হলে কবরে তাঁকে শাস্তি দেয়া হবে না । হাদিসের এই বক্তব্যের মধ্যে পেট সংক্রান্ত যাবতীয় অসুস্থতাই শামিল ।যেমন কলেরা , বমি পেট বেদনা ইত্যাদি । জুম্মার দিনে বা রাতে মৃত্যু হলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) বলেন , রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন , “কোন মুসলমান ম্যক্তির জুম্মার রাতে বা দিনে মৃত্যু হলে , আল্লাহ্‌ তাঁকে কবরের আজাব ও পরীক্ষা হতে নিরাপদে রাখেন । — - তিরমিজি শরীফ, আহমদ রমজান মাসে মৃত্যু হলে হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) বলেছেন , রমজান মাসে কবরে মৃতদের শাস্তি মুলতবি রাখা হয় । — - বায়হাকি হযরত আনাস (রা) আরও বলেন- রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “কোন মুসলমান জুম্মার দিনে ইন্তেকাল করলে তাঁকে কবরের আজাব থেকে নিরাপদে রাখা হয় । — - শরহে সুদূর , আবু ইয়ালা মুজাহিদ , শিমান্ত প্রহরী ও শহীদ গনের মর্যাদা হযরত মিকদাম ইবনে ইয়াক রাব (রা) বলেন , রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন , “ আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছে শহীদ গনের জন্য ছয়টি পুরুস্কার রয়েছে । তা হল – ১) রক্তের প্রথম ফোঁটা পতিত হওয়ার পূর্বেই তাঁকে ক্ষমা করা হয় । আর জান্নাতে তার যে বাসস্থান রয়েছে । তা তাঁকে প্রদর্শন করা হয় । ২) শহীদ গন কে কবরের আজাব থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখা হবে। ৩) শিঙ্গা ফুঁকের সময় মানুষ যেভাবে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে , তাঁরা তা থেকে নিরাপদে থাকবে । ৪) শহীদ গনের মাথায় সম্মানের প্রতিক স্বরূপ এমন এক মুল্লবান তাজ পরান হবে । যার ইয়াকুত পাথর গুলো দুনিয়া এবং তাতে যা কিছু আছে তার চেয়ে ও মূল্যবান ও উত্তম হবে । ৫) জান্নাতে তাঁদের সঙ্গিরুপে বাহাত্তর জন অপরুপা হুর প্রদান করা হবে । ৬) সত্তরজন আত্মীয়ের বেপারে তাঁদের সুপারিশ কে কবুল করা হবে । — - তিরমিজি শরীফ , ইবনে মাজা হযরত সালমান ফারসি (রা) বলেন , বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন , “ আল্লাহ্‌র পথে ইসলামী রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সীমান্তের প্রহরায় একদিন এক রাত কাটানো , একমাস নফল রোজা এবং এক মাস রাতভর নফল নামাজ আদায় করার চেয়েও উত্তম । প্রহরায় নিয়োজিত ব্যাক্তি যদি প্রহরারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে , তাহলে সে যে আমল করেছিল , কেয়ামত পর্যন্ত তাঁকে সেই আমলের সওয়াব প্রদান করা হবে এবং শহীদদের ন্যায় তার জীবিকাও চলতে থাকবে, আর সে কবরের আজাব ও পরীক্ষা হতেও নিরাপদ থাকবে । — - মুসলিম শরীফ হযরত আবু আইউব (রা) বলেন , রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- কোন ব্যাক্তি শত্রুর মোকাবেলায় দৃঢ় পদে দণ্ডায়মান থেকে নিহত হলে অথবা জয়ী হলে, তাঁকে কবরের পরীক্ষায় নিপতিত করা হয় না । — - নাসাঈ শরীফ, তাবারানি ।

No comments: